বাঘ
হাতি নিধনে পারঙ্গম হলেও আমরা মশা
নিধনে উদারতা দেখাচ্ছি। মশার সাথে মশকরা
করছি। বিদেশ থেকে কিনে আনা
ফগার মেশিন কর্পোরেশনের স্টোর রুমে পড়ে থেকে
বিকল হচ্ছে। আমার নিজের বাড়ির
সামনে পড়ে আছে ময়লার
স্তুপ। কর্পোরেশনের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করতে করতে আমি
বাড়াচ্ছি ময়লার কলেবর। ঘুরেফিরে আসছে ত্রৈলক্যনাথের কঙ্কাবতী
উপন্যাসের মশা প্রভুর কথা।
দীর্ঘশুণ্ড
ছিল মশা প্রভুর নাম।
মশাদের নেতা হিসেবে মশার
ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। মানুষের
ওপর মশার প্রভুত্ব বজায়
রাখা যায় রাতদিন তার
এ নিয়ে ছিল চিন্তা। মশার
জন্যেই মানুষের সৃষ্টি এ ছিল তার
বিশ্বাস। তাই
কঙ্কাবতীকে সে বলে,শুনোহে
মনুষ্য শাবক এ পৃথিবীতে
কোন না কোন মশা ই তুমার
মালিক।
দীর্ঘশুণ্ড
দূরদৃষ্টি সম্পন মশা নেতা। সে
বুঝতে পেরেছিল মানুষ নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আটকে থাকবে না।
তারা এক দেশ থেকে
অন্য দেশে যাওয়া শুরু
করেছে। এতে শোষণ করার
জন্য মশারা যে অঞ্চল বিভাজন
নীতি চালু করেছে তা
ভেঙ্গে পড়ছে। এক
অঞ্চলের মশার খাবার অন্য
অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। মানুষের
সাথে মানুষের মেলা মেশায় তাদের
যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জ্ঞান বিজ্ঞান,
ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি হচ্ছে। মানুষের সম্পদ বৃদ্ধির ফলে মশারি কিনছে।
তাই লবিস্ট নিয়োগ করে দীর্ঘশুণ্ড। ভাড়াটে
দার্শনিকেরা প্রচার করে ভারতবাসীর জন্যে
ভারতের বাহিরে যাওয়া পাপ। এতে ধর্ম
নষ্ট হয়। খোদ ত্রৈলক্যনাথ
বিদেশ যাত্রা থেকে ফিরে প্রায়শ্চিত্ত
করেছিলেন।
দীর্ঘশুণ্ড
বিশ্বাস করত এ বিশ্বাস
চালু করলে ভারতের মানুষ
আর বহির্বিশ্বে যাবে না। কলিকাল
ভারতবাসীগণ চক্ষে ঠুলি দিয়া, হাত
জোড় করিয়া অন্ধকূপের ভিতর বসিয়া থাকিবে,
আর পৃথিবীর যাবতীয় মশা আসিয়া তাহাদিগের
রক্ত শোষণ করিবে।
পরিবর্তন
কেমন হল দেড়শ বছরে।
ভারতবর্ষে দীর্ঘশুণ্ডদের সংখ্যা বেড়েছে। মানুষরূপী দীর্ঘশুণ্ডরা পরিস্থিতির আরও অবনতি চায়।
না হলে প্রজেক্ট আসবে
কোথা থেকে?
তাই
টিভি খুললেই স্বচ্ছ ভারতের বিজ্ঞাপন।
আজ বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন টি আমি প্রচার
করলাম। আসুন দীর্ঘশুণ্ডদের দমনে
কারো পানে না তাকিয়ে
নিজেরা এগিয়ে যাই।
লেখক:
পার্থ প্রতিম নাথ